পঙ্গপাল খুব মারাক্তক এক ধরনের ক্ষতিকর পোকা।এই পোকা যেখানে যায়
সেই এলাকার সকল ফসল খেয়ে নষ্ট করে ফেলে।
টেকনাফে পঙ্গপাল নয়- টেকনাফে পোকার আক্র’মণে পঙ্গপালের আ’তঙ্ক তৈরি হওয়ার
পর সেগুলোকে ঘাসফড়িং প্রজাতির বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ববিদরা।




শনিবার দুুুপুরে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লম্বরী এলাকা পরিদর্শন শেষে এসব
কথা বলেন তারা। ঢাকা থেকে সকালে টেকনাফে পৌঁছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের একটি দল।
এ সময় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. নির্মল কুমার দত্ত বলেন,
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কীটতত্ত্ববিদ সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা এখানে এসেছি।
ইতিমধ্যে জনমনে আত’ঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যে টেকনাফের এই অঞ্চলটাতে পঙ্গপালের উপস্থিতি পেয়েছে। আসলে আমরা সরেজমিনে দেখলাম যে পোকাটা আমরা




পর্যবেক্ষণ করেছি এটি বিধ্বং’স পোকা পঙ্গপাল নয়, যেটা আমরা ইতিমধ্যে
জাতীয়ভাবে শনাক্ত করতে পেরেছি এটি একটি ঘাসফড়িং। এটি বিভিন্ন বনজঙ্গলে
এবং ক্ষেত্র বিশেষে কিছু ফসলের ক্ষতিকর পোকা। এটা তেমন ক্ষতি করে না।
এটা নিয়ে আত’ঙ্ক হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তিনি আরো বলেন, এটা বহু আগে থেকে বাংলাদেশের রেকর্ডে ছিল। এটা আমরা
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জেনেছি এটা আগে থেকেই পরিচিত একটি পোকা।
স্থানীয় একজন কৃষক আমাদেরকে বলছেন, এটা বর্মাচান্ডালী নামে পরিচিত।
যেহেতু বার্মা থেকে এসেছে সেই জন্য এই নাম বলা হয়। আসলে আমাদেরও
ধারণা এটি বার্মা থেকে আসতে পারে।এটা শুধু বাংলাদেশের রেকর্ডের না।
ভারত, শ্রীলংকা, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া ইত্যাদি দেশেও এর উপস্থিতি আছে।
সব দেশে ক্ষতিকারক পোকা হিসেবে চিহ্নিত আছে। কিন্তু আবার এটি নিয়ে
আ’তঙ্কি’ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটি একটি ঘাসফড়িং প্রজাতির পোকা।
ঢাকা খামারবাড়ি উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং এর উপ-পরিচালক, আই পিএম, মো. রেজাউল ইসলাম
বলেন, গত কয়েকদিন ধরে এই পোকাটা নিয়ে দুশ্চিন্তা আমাদের কৃষি বিভাগসহ সারা
বাংলাদেশে সবার মাঝে এসেছে। ইতিমধ্যে আমরা কৃষি প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ধান
গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের আলোচনা থেকে বুঝলাম আসলে এটা পঙ্গপাল না এটা
ঘাসফড়িং এর প্রজাতি। এটা একটা অপদান পোকা।
যেহেতু এখানে এ পোকার আক্র’মণ দেখা দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
কক্সবাজার এবং স্থানীয় কৃষি অফিস এটা ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করছেন। তারা
সাইফার মেট্রিন জাতীয় কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করে এটি দমন করতে পেরেছে।
বেশ কয়েকবার স্প্রে করার পর এখানে জীবন্ত একটি পোকাও দেখা যায়নি।
কক্সবাজার জেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী পরিচালক মো. আবুল কাশেম জানান,
পঙ্গপাল বলে প্রচার হওয়ায় দ্বিতীয় বারের মত পরিদর্শন করেছি। এগুলো পঙ্গপাল নয়।
কীটনাশক স্প্রে করার পর পোকা নেই। এ ধরনের পোকার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে




কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। একই সাথে জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচার
অর্গানাইজেশনের ৩ জন কর্মকর্তা পরিদর্শন করেছেন।
টেকনাফ একটি বাগান মালিক সোহেল সিকদার জানান, কিটনাশক ছিটানোর
পর এসব পোকা মরে যায়। দুপুরে কৃষি বিভাগ থেকে একটি টিম এসে যাচাই করেছে।




এ সময় কিটনাশক স্প্রে করা হয়। এ সময় কিছু পোকাও সংগ্রহ করেন তারা।
উল্লেখ্য টেকনাফের লম্বরী গ্রামের একটি বাড়ির আম গাছসহ বিভিন্ন ফলজ ও
বনজ গাছের শাখা-প্রশাখায় সম্প্রতি দেখা মিলে এক ধরনের পোকা। পোকাগুলো
গাছের পাতা সম্পূর্ণ রূপে খেয়ে ফেলছে। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যম এলে বেশ হৈচৈ পড়ে যায়। কৃষি বিভাগও নড়ে চড়ে বসে।



