শত বছর বাঁচার জন্য সঠিক কিছু নিয়ম খেয়াল করুন হতেও পারে আপনি শত বছর বাঁচবেন।
১. ঠিক মতো ঘুমান
দিনে ঠিক কতোটুকু সময় ঘুমাচ্ছেন এবং সেই ঘুম কেমন হচ্ছে সেটা
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি ঘুম যেমন খারাপ
তেমনি খারাপ অল্প ঘুমও। ড. হারপার বলছেন, সেকারণে ঠিকঠাক মতো




ঘুমাতে হবে।ফলে আমরা যারা ঘুমের চাহিদা মিটিয়ে নিতে অল্প একটু
সময় চোখ বন্ধ রেখে ভাবছি যে আমাদের ঘুম হয়ে গেছে, তাদেরকে একটু সতর্ক হতে হবে।
তিনি বলেন, “দিনের বেলা অল্প কিছুক্ষণের জন্যে ঘুমিয়ে নেওয়া,




যেটাকে আমরা ক্যাটন্যাপ বলি, সেটার কথা আমরা জানি।
তবে সেটা ঠিকঠাক মতো হতে হবে। যেমন একটা ব্যাটারিকে পুরোপুরি চার্জ দেওয়া হয়।
আমরা যদি শুধু ক্যাটন্যাপ দিয়ে চালিয়ে নেবার চেষ্টা করি তাহলে সেটা স্বাভাবিক হবে না।




রাতের বেলা আমরা বেশ কয়েকবার গভীর ঘুমে তলিয়ে যাই।”
২. হাঁটাচলা করুন
আমাদের অনেকেই প্রচুর সময় বসে থেকে কাটাই। এবং এটা আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো নয়। সুসংবাদ হচ্ছে যে এজন্যে আমাদের ম্যারাথন রানার হতে হবে না।




যেটা করতে হবে সেটা হলো শরীরটাকে একটু নাড়ানো- মানে হাঁটাচলা করা।
ড. হারপার তার বই লিখতে গিয়ে এরকম বহু মানুষের সাথে কথা বলেছেন যারা
এক শতাব্দী কাল ধরে বেঁচে আছেন। তিনি দেখেছেন, তাদের সবার মধ্যেই একটি জিনিসের মিল আছে।




সেটা হলো তারা কিন্তু কোন অ্যারোবিকসের ক্লাসে যায়নি, কিম্বা স্কোয়াশ
খেলতেও যায়নি, কিন্তু তারা প্রচুর হেঁটেছেন।”
৩. আপনার লিভারকে একটু বিশ্রাম দিন




এক গ্লাস রেড ওয়াইন হয়তো অনেকের কাছে খুব আনন্দের কিছু।
কিন্তু ড. হারপার বলছেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় পান করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, “অবশ্যই প্রত্যেক রাতে পান করা যাবে না। আপনার লিভারকে একটু বিশ্রাম দিতে হবে।




সপ্তাহে অন্তত দু’দিন।”
৪. আপনার জিন সম্পর্কে জানুন
বিশেষ কোন অসুখে পড়ার প্রবণতা হয়তো আপনার মধ্যে বেশি থাকতে পারে।




কিন্তু ড. হারপার বলছেন, আপনার পরিবারের বা বংশের অন্যান্য সদস্যদের
অসুখ বিসুখের ইতিহাস জানা থাকলে সেটা আমাদেরকে সুস্থ ও
সুন্দর জীবন যাপন করতে সাহায্য করতে পারে।তিনি বলেন,




“জিন যে শরীরে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এই মুহূর্তে হয়তো আমি আমার জিন নিয়ে বেশি কিছু করতে পারবো না।
কিন্তু কোন কোন জিনের কারণে আমরা বিশেষ একটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছি




সেটা জানলে আমাদের সুবিধা হবে। হৃদরোগের কথাই ধরুন। আমি তো
আর আমার জীবন নিয়ে যন্ত্রণায় ভুগতে চাই না। কিন্তু আমি হয়তো এক্স
এবং ওয়াই ক্রোমোজোম সম্পর্কে আরো একটু সচেতন হতে পারি।




৫. কার্বোহাইড্রেটের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে
ভাত ও রুটির মতো কার্ব পরিহার করা আজকালকার দিনে হয়তো
একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ডা. হারপার বলছেন, ব্যালেন্সড




ডায়েটের জন্যে আমাদেরকে এসবও খেতে হবে। খুব বেশি আনন্দিত হবার কিছু নেই।
এখানেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।”আমি সবসময় রিফাইন বা মসৃণ
কার্ব না খেয়ে বরং একটু জটিল ধরনের (মোটা আটার) কার্ব খাওয়ার কথা বলবো।




যেমন বাদামী চাল, আস্ত শস্য দানা সমেত মোটা আটার রুটি।
৬. প্রতিদিন হাসুন
সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত আনন্দের- এটা মনে রাখতে হবে।
এটাকে দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজের অংশ হিসেবে দেখলে হবে না।
এখানে মানসিকতার একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। ড. হারপার বলেন,
“এজন্যে ইতিবাচক মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”




বইটি লিখতে গিয়ে গবেষণা করার সময় তিনি একজন বিজ্ঞানীর করা
একটি গবেষণা খুঁজে পেয়েছেন যেখানে তিনি দীর্ঘ আয়ুর সাথে তিনি
হাসিখুশির থাকার একটা সম্পর্কে খুঁজে পেয়েছেন।
“এমন কিছু করুণ যা প্রতিদিন আপনাকে হাসিখুশি রাখবে,” বলেন তিনি।
৭. চাপমুক্ত থাকার রাস্তা খুঁজে বের করুন
আমাদের অনেকেই নানা রকমের স্ট্রেসের মধ্যে থাকি বা মানসিক চাপে ভুগি।




এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর।
সেটা শারীরিক ও মানসিক দু’ধরনের স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করে।
“আজকের দিনে নানা কারণে স্ট্রেসের সৃষ্টি হয়। সেটা কাজের কারণে হতে পারে,




হতে পারে সম্পর্কের কারণেও। পারিবারিক কারণেও হয়। কিন্তু এসব চাপ থেকে
কীভাবে মুক্ত থাকা যায় তার উপায় প্রত্যেককে আলাদা আলাদাভাবে খুঁজে নিতে হবে।
কারণ একেকজনের বেলায় এটা একেকভাবে কাজ করে,” বলেন ড. হারপার।




এজন্যে একজন চিকিৎসক কিম্বা এসংক্রান্ত অন্যান্য পেশাজীবীদের কাছ
থেকেও সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।
এটা খুবই ব্যক্তিগত। একেকজনের বেলায় একেক রকমের।
সেটা তার মতো করে করা দরকার। তবে আমরা সবাই মিলে কিছু একটা করতে পারি।”



