নেপালের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ ফের নতুন মোড় নিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম নিউ ইন্ডিয়ান
এক্সপ্রেস জানায়, দেশটির সীমান্তবর্তী উত্তরাখন্ডের চম্পাওয়াত জেলার টনকপুর শহরের কাছে
নো-ম্যানস ল্যান্ডে কংক্রিটের খুঁটি পুঁতে নেপাল জমি দ;খ’লের চেষ্টা করেছে।




এ ঘটনার পরই এলাকাটিতে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে । ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ওই এলাকা
পরিদর্শনে গেলে তীব্র ভারত-বি’রোধী বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাদেরকেও।
টনকপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে বিবিসি’ জানায়, যেসব নেপালিরা ভারতের দিকে অস্থায়ীভাবে




বাস করে ছোটখাটো ব্যবসা করতেন তারাও উ’ত্তেজ’নার জেরে পাট গুটিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গেছেন।
গত বুধবার সী’মা’ন্তের ব্রহ্মদেব নামে একটি এলাকায় নেপালিরা বেশ কিছু কংক্রিট ও কাঠের খুঁটি পুঁতে
এবং অনেক গাছপালা লাগিয়ে বেশ বড় একটি এলাকা ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে। ভারতের ‘অ’ভিযোগ,




স্থানটি নো-ম্যানস ল্যান্ডের ভেতর পড়ছে। চম্পাওয়াতের পুলিশ সুপার লোকেশ্বর সিং বিবিসি’কে বলেন,
‘সীমান্তের মিসিং পিলার নাম্বার ৮১১, অর্থাৎ যেখানে কোনো দেশেরই সীমান্ত পিলার নেই, সেখানে ওরা কিছু
প্ল্যান্টেশন করেছে ও বেড়া বানানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। জায়গাটা নো ম্যানস ল্যান্ডে পড়ে।’




‘রোববার সকালেও নেপালের কর্মকর্তারা জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন, তারপর আমাদের সঙ্গে তাদের
আলোচনায় বসার কথা আছে।’ তবে ঘটনা হল, ভারতের যে সশস্ত্র সীমা রক্ষী বা এসএসবি নেপাল সী’মান্ত
পাহারা দিয়ে থাকে তারা এর আগে দুবার ব্রহ্মদেবে গিয়ে নেপালিদের বিক্ষোভ ও ভারত-বিরোধী স্লোগানের




মুখে পড়েছে – খুঁটি বিরোধের এখনো কোনো সমাধান হয়নি। পুলিশ প্রধান মি সিং বলেন, ‘আমরা
প্রথম থেকেই নেপালের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা বলছি, দিল্লিতেও ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’ খুব শিগগিরই বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান করা সম্ভব হবে বলেও
তিনি আশাবাদী – যদিও টনকপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা অতটা আশ্বস্ত বোধ করতে পারছেন না।
শহরের কাপড় ব্যবসায়ী ভিনিত জোশী বিবিসি’কে দাবি করেন, ‘দেখুন ওরা সীমান্তের জমি অন্যায়ভাবে
দখল করে রেখেছে – নো ম্যানস ল্যান্ডের ভেতর প্রায় ২৫০ গজ ভেতরে ঢুকে পড়েছে।’




‘আমাদের বাহিনী ওখানে গিয়ে বোঝানোরও চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। শহরের অবস্থা
এখনও মোটামুটি ঠিকই আছে, কিন্তু সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোতে পরিস্থিতি থমথমে হয়ে উঠছে বলেই আমরা
খবর পাচ্ছি।’ অথচ টনকপুরে এতদিন নেপালি ও ভারতীয়রা পাশাপাশিই ব্যবসা করে এসেছেন, সীমান্ত
পারাপারেও কখনও লাগেনি পাসপোর্ট-ভিসা। কিন্তু আড়াই মাস আগে কালাপানি নিয়ে ভারত এবং নেপালের
সীমান্ত বিরোধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অবস্থা পাল্টাতে শুরু করে। কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা – এই
তিনটি বি’তর্কিত অঞ্চলকে নিজেদের মানচিত্রে অ’ন্তর্ভুক্ত করে নেপাল সম্প্রতি পদক্ষেপ নেয়ার পর তা নিয়ে দিল্লি
ও কাঠমান্ডুর কূটনৈতিক সম্পর্কে এর মধ্যেই ফাটল ধরেছে।







