বাংলাদেশ এখনো করো’না মুক্ত হয়নি, আবার বিশ্বে করো’নায় নাস্তানাবুদ হয়েছে যে দেশগুলো
সে তালিকাতেও বাংলাদেশ নাই। বরং করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ
ক্রমশ একটি দৃষ্টান্ত বা রোল মডেল রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। করো’নার সঙ্গে বসবাস




করে অর্থনীতিকে সচল রাখা এবং গরীব মানুষকে প্রণোদনা দিয়ে তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে রাখার
যে কৌশল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করেছিলেন, সেই কৌশল এখন প্রশংসিত হচ্ছে সারা বিশ্বে।
শেখ হাসিনার এই ম্যাজিক কৌশলের কারণেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। করোনা পরবর্তী বিশ্বে যে




দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হবে এবং যে দেশগুলো করোনায় বিপর্যস্ত হয়নি,
সেই দেশগুলোর তালিকায় প্রথমদিকে থাকছে বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শুরু
হয়েছিল গত ৮ মার্চ।এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন।




প্রথমত, তিনি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। প্রায় দুই মাস বাংলাদেশ সাধারণ ছুটির মধ্যে ছিল।
সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব ধরণের সভা, সমাবেশ এবং গণজমায়েত হতে পারে এ ধরণের সব
কর্মসূচী বন্ধ রাখা হয়েছিল। হোটেল রেস্তোরাঁ সহ পর্যটন কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল।




এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী যেটি করেছিলেন, সব মানুষের জন্য নানা রকম প্রণোদনা।
গরীব মানুষদের যেমন আর্থিক, খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। তেমনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা
থেকে শুরু করে একেবারে বৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তা পর্যন্ত নানা রকম আর্থিক ঋণ




ও অর্থনৈতিক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা যখন দেখতে পেলেন বাংলাদেশে করো’নার
মাত্রা সহনীয় এবং মৃ’ত্যু হার কম। তখন তিনি করোনার সঙ্গে বসবাসের কৌশল গ্রহণ করেন, সেই
কৌশলের সুফল আজ পাচ্ছে বাংলাদেশ। এই সময়ে যে সমস্ত বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন,




আ’শঙ্কার কথা শুনিয়েছিল এবং বাংলাদেশে ভ’য়াব’হ প’রিস্থিতি হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন,
তাদের সেই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো আপাতত ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ম্যাজিকের কারণে
পাঁচটি দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা ঘটেছে। করোনার সঙ্গে বসবাস: বাংলাদেশে করো’না সং’ক্রম’ণ আছে।




প্রতিদিন নতুন রোগী হচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষ সুস্থও হচ্ছে। করোনায় মৃত্যুর হার ১.৩২ এর
আশেপাশে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ সবকিছু বন্ধ না রেখে করো’নার সঙ্গে বসবাসের যে নীতি ও কৌশল,
সেই নীতি কৌশল অব্যাহত রেখেছে। একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে।
করোনার সঙ্গে এই বসবাসের কৌশলের ফলে মানুষের মধ্যে যেমন আবার নতুন করে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে
এসেছে। তেমনিভাবে মানুষও এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে জীবন যু’দ্ধে নিজেদের ব্যস্ত রাখতে চাইছে।
অর্থনীতিতে গতি আনা: করো’নার প্রথম থেকেই শেখ হাসিনার লক্ষ্য ছিল করোনার কারণে অর্থনীতি যেন
বিপর্যস্ত না হয়ে পড়ে। অর্থনীতি যেন সচল থাকে। এজন্য প্রথম দিন থেকেই অর্থনীতির বিষয়টি তিনি
গুরুত্ব দিচ্ছিলেন। বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দেশ যারা করো’না সং’ক্রম’ণ শুরু হওয়ার সাথে সাথেই বিপুল
অংকের টাকা আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেন। অর্থনৈতিক গতি আনতে প্রধানমন্ত্রীর




উদ্যোগে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। যার সুফল এখন বাংলাদেশ পাচ্ছে এবং অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
কৃষিতে গুরুত্ব: শেখ হাসিনার অন্যতম ম্যাজিক কৌশল ছিল কৃষিতে গুরুত্ব দেওয়া। করোনার সময় যেন কৃষি
উৎপাদন বন্ধ না থাকে- সেদিকে তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে নজর দিয়েছিলেন। বোরো ধান উৎপাদনের সময়




তার নির্দেশেই রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ এই করো’নাকালীন সময় বোরো ধান কাটা
কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলো। বাংলাদেশে খাদ্য মজুত যা আছে, তা সন্তোষজনক। বাংলাদেশকে কোন খাদ্য
সং’কটের মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে না। রপ্তানিতে আশার আলো: বাংলাদেশে রপ্তানি বিশেষ করে গার্মেন্টস
শিল্প নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিতা এবং ম্যাজিক কৌশলের কারণেই করো’না
সং’কটের মধ্যে বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা ও পরামর্শ উপেক্ষা করে গার্মেন্টসগুলো খুলে দেওয়া হয়। এখন দেখা
যাচ্ছে গার্মেন্টসে সং’ক্রম’ণ হার অনেক কম। বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প বিশ্ব বাজারে একটা ভালো প্রতিযোগিতার




দিকে যাচ্ছে। অভিবাসনের নতুন বাজার: করোনা সংকটের কারণে অভিবাসনে একটা ধ্বস নামতে পারে,
শেখ হাসিনা এটা প্রথম থেকেই অনুমান করেছিলেন। সে কারণে পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়কে তিনি নতুন বাজার অন্বেষণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। করো’না পরবর্তী বিশ্বে




বাংলাদেশ অভিবাসন খাতে যেন পিছিয়ে না পড়ে, সে ব্যাপারে তিনি সতর্কতা অবলম্বন করেছিলেন।
গত দুই মাসে বাংলাদেশ রেমিটেন্স প্রাপ্তিতে এক নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছেন। আর সে কারণেই বাংলাদেশ
করো’নায় নাস্তা’নাবুদ হয়নি। বরং করোনাকে সঙ্গে নিয়েই অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর এই
কারণেই বাংলাদেশ এখন এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্তে পা রাখতে যাচ্ছে। সূত্র: বাংলা ইনসাইডার।



