



বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো ও দেশে-বিদেশে
চিকিৎসার সুযোগ দিতে আবেদন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত আবেদন স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে জমা দেয়া হয়েছে। আবেদনে সই করেছেন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার।




স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার সেই আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। আবেদনপত্রে বলা হয়, করোনাকালীন দুর্যোগে
খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়নি। পাশাপাশি তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য শারীরিক অসুস্থতায়
কোনো পরীক্ষাও করা সম্ভব হয়নি।




করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে যাওয়া অফিস-আদালতসহ গণপরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্বাভাবিক
পরিস্থিতিতে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও এ সংক্রান্ত শারীরিক পরীক্ষা-




নিরীক্ষা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে বলা হয়, বয়স, শারীরিক অসুস্থতা ও মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়ার
স্থায়ী মুক্তির আবেদন করা হল। বিএনপির চেয়ারপারসনের পরিবারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বলেন, খালেদা জিয়া খুবই




অসুস্থ। তারা তার মুক্তি চেয়েছিলেন চিকিৎসা করাবেন বলে। কিন্তু যখন তিনি মুক্তি পান তখন করোনা মহামারীর
কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়াটা সম্ভব হয়নি। এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য
সরকার বিদেশ যেতে অনুমতি দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তার আইনজীবী ও দলের যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার




মাহবুব উদ্দিন খোকন। এছাড়া সাজা স্থগিতের মেয়াদ সরকার বাড়াবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শনিবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
রাত সাড়ে সাতটায় খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় যান মাহবুব উদ্দিন খোকন। প্রায় দুই ঘণ্টা




সেখানে অবস্থান করেন তিনি। সাক্ষাত শেষে বাসার গেইটে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক
অসুস্থতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি অসুস্থ, তার জরুরিভাবে চিকিৎসা প্রয়োজন- এসব বিষয়ে কথা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিদেশ যেতে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন নেই। সরকারের সিদ্ধান্তেই তিনি




বিদেশ যেতে পারবেন।’ বিএনপি চেয়ারপারসন সর্বশেষ চিকিৎসা নিয়েছেন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রেও চিকিৎসা নিয়েছেন। গত কয়েক বছর ফলোআপ চিকিৎসা হচ্ছে না।
এ কারণে এবার আরও লম্বা সময়ের জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছেন।




তারা চান যেন খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিন দেয়া হয়। সে ব্যাপারে সরকারপ্রধান যেন ব্যবস্থা নেন।
ছয় মাসের জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হলেও সরকার সেখানে শর্ত জুড়ে দেয়। সেখানে বলা হয়
খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে পারবেন না। তবে এবার মুক্তির ক্ষেত্রে আবেদনে শর্ত বাতিলের কথা বলা আছে।




দুই বছরের বেশি সময় কারাভোগের পর গত ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
(বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পরিবারের




আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ মার্চ খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে তাকে
মুক্তি দেয় সরকার। যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরে। সূত্র : যুগান্তর



