বাংলাদেশের শূন্য দশক-পরবর্তী চলচ্চিত্রের সময়টা এককভাবে নিজে’র আয়ত্তে রেখেছিলেন চিত্রনায়ক মান্না। সেই মান্না আকস্মিকভাবে ‘নাই’ হয়ে গে’লেন। মান্নার মৃ’ত্যু এখন পর্যন্ত স্বা’ভাবিকভাবে নিতে পারেনি লক্ষকোটি ভক্ত। এখনো মান্নার জন্য চোখের জল আসে অজস্র অনুরাগীর। আগামীকাল ১৭ ফেব্রুয়ারি, চিত্রনায়ক মান্নার




প্রয়াণের আজ ১৩ বছর। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতা’লে মা’রা যান সৈয়দ মোহাম্ম’দ আ’সলাম তালুকদার ওরফে মান্না। কিন্তু মান্নার ওই মৃ’ত্যুকে কোনোভাবেই স্বা’ভাবিক মানতে রাজি নন




মান্নার স্ত্রী’ শেলী মান্না। তার দা’বি মান্নাকে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎ’সা দেওয়া হয়নি। কোনো প্র’স্তুতি না রেখেই মান্নাকে হার্টের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, যেটা উন্নত বিশ্বের চিকিৎ’সাশাস্ত্রে ঘ’টে না। শেলি জা’নান, এ বছরই মান্নার শুনানি হবে, আর মানুষ জানবে মান্নার মৃ’ত্যু কিভাবে হয়েছে।




স’ম্প্রতি মান্নার স্ত্রী’ শেলী, মান্নার মৃ’ত্যুর ওই সময়টা পুরোপুরি কথাপ্রবাহে তুলে ধ’রার চেষ্টা ক’রেছেন। চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতির উঠোনে বসে শেলী বলেন, ‘আমি একজন ডাক্তারের মে’য়ে। আমা’র বাবা একজন ডাক্তার। বাংলাদেশে এমবিবিএস তখনো চালু হয়নি। আমা’র বাবা কলকাতা থেকে পাস ক’রেছেন। সেই আমলের ডাক্তার।








আমা’র বাবা যেহেতু আক্তার, সেহেতু আমি ডাক্তারদের খাটো করে কিছু বলছি না। বলতে গেলে আমাদের দেশের সিস্টেম, প্রক্রিয়ার কথা বলতে হয়। আমা’র বাবা ডাক্তার, সেহেতু আমি কিছুটা জানি। আমি যেখানে চাকরি করি, সেখানে সব ব্যাপারে প্রশিক্ষণ নেই। উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে হয়।’




মান্নার মৃ’ত্যুর পূর্বের সময়টা উল্লেখ করে শেলী বলেন, ‘মান্না মাঝরাতে যখন বাসায় ফি’রেছে তখন বুকে একটু ব্য’থা করছিল। রাতে খাওয়াদাওয়া করেছে, কিন্তু ব্য’থা তো যায়নি। মান্না হলো অ’তি সত’র্ক একজন মানুষ। আম’রা হলে হয়তো এতটা হতাম না। মান্না ইগনোর করে না। একটা অ্যালার্জি হলেও ডাক্তারের কাছে যায়।




ওর অ’সুখবিসুখ বলতে কিছু ছিল না, শুধু এসিডিটি ছিল। যেহেতু ব্য’থা কমছে না, মান্না ভাবল ইউনাইটেড হাসপাতা’লে যাই। কেন ইউনাইটেডে যাবে, কারণ পিতা-মাতার শু’টিং ইউনাইটেড হাসপাতা’লে করা হয়েছিল। তখন মনে হয়েছিল, ইউনাইটেড হাসপাতাল মনে হয় বেস্ট। ওয়েল অর্গানাইজড।




শেলী বলেন, মান্না কিন্তু গাড়ি চালিয়ে গেছে। ডাক্তারের ভাষায় অ্যাকুইট হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। যদি কারো কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় সে কোনোভাবেই গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবে না। একটা স্টেপও নিতে পারবে না।




ইউনাইটেড হাসপাতাল আমাদেরকে যেসব ফুটেজ দিয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে মান্না হেঁটে গিয়েছে। তাঁর বিভিন্ন টেস্ট করিয়েছে। তারপর ভর্তি হয়েছে। তাকে কিন্তু কেউ ধ’রেও নেয়নি, কিছু না। সে একজন স্বা’ভাবিক মানুষ গিয়েছে। গ্যাসের পেইন, হার্টের পেইন সেইম। ডাক্তাররাও একইভাবে ট্রিটমেন্ট করেন।




হাসপাতা’লে ভর্তির নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করে শেলী বলেন, মান্না যখন হাসপাতা’লে ভর্তি হলো তখন ভোর পৌনে পাঁচটা। আমি যদি বাংলাদেশে থাকতাম তাহলে কী’ করতাম? যে হার্টের স্পেশালিস্ট তাকে দেখাতাম। এই কারণে…। আমা’র যখন হাত ভে’ঙে গিয়েছিল তখন আমি অর্থোপেডিকস ডাক্তারের কাছেই গিয়েছিলাম।








সাধারণ ডাক্তাররা কিন্তু আমা’র হাত জোড়া লা’গাতে পারবে না। মান্নার চিকিৎ’সা কিন্তু সাধারণ ডাক্তাররা করেছে। ট্রিটমেন্ট করে যখন ক’ন্ট্রোল ের বাইরে চলে গেছে। ৭টা ৪০-এর দিকে তারা হার্টের একটা ইনজেকশন দেয়। ইনজেকশনের নাম এসকে। অ’ভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই এসব করা হয়েছে। আম’রা কেস করেছি, এগুলো পয়েন্ট




আছে।’ উন্নত দেশের চিকিৎ’সাব্যব’স্থা সামনে টেনে এনে প্রয়াত চিত্রনায়কের স্ত্রী’ বলেন সিঙ্গাপুর বলেন, ‘ব্যাংকক বলেন, উন্নত দেশে অ’পারেশন থিয়েটার প্র’স্তুত রেখে, কার্ডিওলজিস্ট স’ঙ্গে রেখে তারপর ওই এসকে ইনজেকশন দেওয়া হয়। মান্নার বেলায় এসব করা হয়নি। ওই ইনজেকশন দেওয়ার পর মান্না গোঙরাইছে।




গোঙরানিতে মান্না তখন বমি করে দিয়েছে। তাদের ডাক্তার রুটিন অনুযায়ী ৯টায় এসেছে। ডাক্তার ফাতেমা’র আন্ডারে ট্রিটমেন্ট। ওই হাসপাতা’লে কি প্রোসিডিউর ছিল না বলেন? ওই সময় ই’মা’র্জেন্সিতে নিয়ে অ’ভিজ্ঞদের স’ঙ্গে নিয়ে রাইট টাইমে রাইট চিকিৎ’সাটা করত, দুই ঘণ্টা ৪০ মিনিটের হিসাব; কিন্তু দিতে পারেনি। আমাদের সিক্সথ সেন্স কাজ করেছে, এই হতে পারত, ওই হতে পারত।’




দুই ঘণ্টার হিসাব কি পাননি? শেলী বলেন, ‘ওরা তো আমাদের ফেস টু ফেস আসেইনি। মা’মলা ওরা দীর্ঘায়িত করার প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। মা’মলাটাকে ম্যানুপুলেট করে ফেলছে। মান্নার মতো একজন মানুষের যদি এই অবস্থা




হয়, তাহলে একজন সাধারণ মানুষের কী’ অবস্থা হবে? এই বছরই একটা শুনানি হবে। এই শুনানি হলে হয়তো আম’রা এক যুগ পরে হলেও ন্যায়বিচার পাব। মানুষ জানবে যে মান্না কিভাবে মা’রা গেছে। ভুল চিকিৎ’সা, দেরিতে চিকিৎ’সা– এসবই মান্নার জীবনে ঘ’টেছে।’







