নির্যাতিত-নিপীড়িত রোহিঙ্গা মুসলিম গোষ্ঠীর কাছে ইসলামের পবিত্রতম গ্রন্থ কুরআনুল কারীমের অনুবাদ
নেই। প্রথমবারের মতো, রোহিঙ্গা মুসলিমরা তিলাওয়াতের পাশাপাশি তাদের নিজস্ব ভাষায় কুরআনুল
কারীমের অনুবাদ শুনতে পাবেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইসলামের পবিত্রতম গ্রন্থ কুরআনুল
কারীমের অডিও এবং ভিডিও অনুবাদ অনলাইনে প্রকাশিত হবে। প্রকল্পটির পিছনে আয়োজকরা
টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে জানান, সৌদি আরবের সাবেক বাদশাহ ফাহাদ এর ইংরেজী সংস্করণের উপর ভিত্তি
করে হওয়া অনুবাদটির প্রথম কিছু অংশ আসন্ন রমজানে প্রকাশিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
জাতিসংঘের মতে রোহিঙ্গা বিশ্বের অন্যতম নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়। নৃশংস সামরিক
হামলার পরে মিয়ানমারে ৮০০,০০০ এরও বেশি লোক (বিপুল সংখ্যক মহিলা ও শিশু) তাদের বাড়িঘর
ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আরাকান নামে পরিচিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেদেশের সেনাদের
দ্বারা ধর্ষণ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং পুরো গ্রাম পুড়ে ছাই করে দেওয়ার একাধিক ঘটনা লিপিবদ্ধ
করেছে মানবাধিকার কর্মীরা। কিন্তু বৌদ্ধ সরকার দশকের পর দশকের নিপীড়ন চালিয়ে রোহিঙ্গা ভাষা,
তাদের বই ও ধর্মগ্রন্থ ধ্বংস এবং শিক্ষা ব্যবস্থা নিষিদ্ধ করে দেয়। কুরআনুল কারীম অনুবাদ প্রচারের
অংশীদার রোহিঙ্গা কর্মী ও উদ্যোক্তা মুহম্মদ নূর টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, “রোহিঙ্গা ভাষায় পড়তে ও
লেখার অনুমতি নেই আমাদের। তারা আমাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়, যা জেলে দেওয়া বা মেরে ফেলা পর্যন্ত
হতে পারে।” তিনি জানান, কুরআনুল কারীমের রোহিঙ্গা অনুবাদে অতীত প্রচেষ্টা অসম্পূর্ণ ছিল এবং
বেশিরভাগ পাঠ্য আকারে ছিল যেখানে উর্দু, আরবী বা লাতিন বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়েছিল। এদিকে,
স্পনসররা শরণার্থী শিবিরে খ্রিস্টান মিশনারীদের কার্যক্রম সম্পর্কে বিশেষত উদ্বিগ্ন। প্রচারমূলক দাতব্য
সংস্থা ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের খ্রিষ্টান বানানোর লক্ষ্যে রোহিঙ্গা ভাষায় বাইবেলের কিছু অংশ
অনুবাদ করেছে। যদিও জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের মতো দুর্বল সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসকে প্রভাবিত করার
চেষ্টা করা সাহায্যকারী দলগুলিকে নিষিদ্ধ করেছে। তারপরেও মুসলিমদের খ্রিষ্ট্রান বানানোর তাদের হীন
অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড